মাছ মাংস ছেড়ে ডিমভাত কেন খাওয়ানো হয় ২১ শে জুলাই?

আজ 21 শে জুলাই। গোটা পশ্চিমবঙ্গ (West Bengal) জুড়ে আজ শহীদ দিবস (Sahid Divas) পালন করবেন তৃণমূল কর্মীরা। ১৯৯৩ সালের ২১ শে জুলাই ঘটে যাওয়া মৃত্যু মিছিলের শহীদদের প্রতি সম্মাননা জ্ঞাপনের উদ্দেশ্যে বছর বছর এই দিনটিতে শহীদ দিবস পালন করে তৃণমূল (Trinamool Congress)। তবে এই দিনটির আবার আলাদা একটা গুরুত্ব রয়েছে মেনুর সুবাদে। অনেকে আবার মজা করে দিনটিকে ‘ডিমভাত’ দিবস (Dim Vat Day) –ও বলে থাকেন।

২০২১ এবং ২০২২, তৃণমূলের শহীদ সমাবেশে ‘ডিম্ভাত’ অনুপস্থিত ছিল। তবে এবছর রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে যে হাজার হাজার কর্মীরা আজ গীতাঞ্জলি স্টেডিয়াম, খুদিরাম অনুশীলন কেন্দ্র, বিধান নগর সেন্ট্রাল পার্ক, শিয়ালদহতে হাজির হবেন তাদের জন্য রান্নাবান্নার ব্যবস্থা হচ্ছে। কিন্তু কখনও ভেবে দেখেছেন কি ‘ডিম্ভাতে’র হঠাৎ এত জনপ্রিয়তা বেড়ে গেল কি করে? কেনই বা একুশে জুলাই ডিম-ভাত খাওয়ানো হয়? চলুন আজকের প্রতিবেদনে জেনে নেওয়া যাক তার কিছু কারণ।

Image 306, ডিমভাত, মাছ মাংস ছেড়ে ডিমভাত কেন খাওয়ানো হয় ২১ শে জুলাই?

২১ শে জুলাইতে তৃণমূল সভায় ডিম-ভাতের মেনু রাখার পেছনে রয়েছে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ কারণ। প্রথমত, ডিম একটি সহজ পাচ্য খাবার। খুব সহজেই এটা হজম হয়ে যায়। আজ উত্তরবঙ্গ-দক্ষিণবঙ্গ মিলিয়ে মিশিয়ে দূর-দূরান্ত থেকে মানুষেরা আসবেন। খাবার খেয়ে তারা যাতে অসুবিধা না করেন তার জন্য ডিমের ব্যবস্থা করা হয়।

Image 305, ডিমভাত, মাছ মাংস ছেড়ে ডিমভাত কেন খাওয়ানো হয় ২১ শে জুলাই?

দ্বিতীয়ত, ডিমের পুষ্টিগুণ।ডিমের মধ্যে ভরপুর মাত্রায় প্রোটিন থাকে। স্বাস্থ্যের জন্য ডিম খাওয়া ভীষণ ভাল। তাই বলতে গেলে কর্মীদের স্বাস্থ্যের দিকটাও খেয়াল রাখে শাসক দল। তৃতীয় কারণটি হল আজ তৃণমূলের সভায় অগণিত লোকের ভিড় হবে। এতগুলো মানুষের জন্য সহজে রান্না করতে ডিমটাই সহজলভ্য। চতুর্থত, ডিম রান্না করাও অন্যান্য মাছ কিংবা মাংস রান্না করার তুলনায় সোজা।

পঞ্চম কারণ, একসাথে পাইকারিতে ডিম কিনলে দাম অনেক কম পড়ে। এত মানুষের পাতে দেওয়ার জন্য মাছ-মাংস কম পড়লেও ডিম কম পড়বে না। ষষ্ঠ কারণ, মাছ-মাংসের পরিমাণের ঘাটতি মেটানো যায় না। কিন্তু, ডিমের সেই ক্ষমতা আছে। তাই মাছ-মাংসের বদলে ডিমটাই রাখা হয়েছে। তবে শুধু একুশের সমাবেশেই মে প্রথম ডিম-ভাত দেওয়ার প্রচলন শুরু করেছিল তৃণমূল তা নয়। অনেক আগে থেকেই তৃণমূলের সভা সমিতিতে এই মেনুই থাকে।

আসলে ৩৪ বছরের বাম শাসনকালের ব্রিগেড সমাবেশে ‘মাছ-ভাত’ থাকত মেনুতে। ২০১১ সালের ক্ষমতা হস্তান্তরের সময় থেকেই তৃণমূলের সমাবেশে কর্মীদের পাতে ডিম এবং ভাত দেওয়ার প্রচলন শুরু হয়। ২০১৯ সালে বিরোধীদের নিয়ে ব্রিগেড সমাবেশের আহ্বান জানিয়ে লেখা একটি দেওয়াল লিখনে তৃণমূলের তরফ থেকে ‘ডিম্ভাত’ মেনুর উল্লেখ ছিল। তা ভাইরাল হয়ে যায় মুহূর্তে। আজ অবশ্য ডিম এবং ভাতের পাশাপাশি আলু সেদ্ধ, আলু-পটলের তরকারি এবং ডালও রাখা হয়েছে মেনুতে।

Leave a Comment