হাসির খোরাক হলেও রানু মন্ডলের জীবন দুঃখে ভরা, রাণু মন্ডলের কাহিনী শুনলে চোখে আসবে জল

সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে যে কতটা জনপ্রিয় হওয়া যায় তার প্রমাণ হলেন রানু মন্ডল। সোশ্যাল মিডিয়ায় তার ভিডিও ভাইরাল হওয়াতে তার অবস্থায় একেবারে পাল্টে যায়। রাতারাতি ভাইরাল হয়ে যান তিনি । সিনেমা তে গান করার সুযোগ পান তিনি ।তবে বর্তমানে আবার ও আগের জায়গাতেই ফিরে এসেছেন তিনি। তবে পরিচিত হওয়ায় মাঝে মাঝে বিভিন্ন ইউটিউবাররা তার বাড়িতে যান ও তার সঙ্গে গল্প গুজব করে। সেই ব্লগ সোশ্যাল মিডিয়াতে আপলোড করেন তারা।

মানসিক ভারসাম্যহীন এই রানু মন্ডল বর্তমানে সকলেরই হাসির পাত্র। তার নাম শুনলে হাসি চলে আসে সকলের। কিন্তু তার জীবন কাহিনী সম্পর্কে আমরা কেউই অবহিত নই ।ফলে সিবিএসসি বোর্ডের ষষ্ঠ শ্রেণীর পাঠ্যপুস্তকে রানু মন্ডল এর জীবনী দেওয়া হয়েছে। সেখান থেকেই তার জীবন সম্পর্কে কিছু জানা যায়। ছোটবেলায় মেয়ে হওয়ার অপরাধে বাবার হাতে তিনি প্রচণ্ড মার খেতেন ।এর ফলের রানু মন্ডলের মা নিজের স্বামীর কাছে ধর্ষিতা হন এবং তার ফলে পুত্র সন্তান জন্ম দেন। যদিও শিশুটি বেঁচে ছিল না তা। রপর স্বামীর হাতে মার খেয়ে রানু মন্ডলের মা আর বেঁচে থাকতে পারেননি। এরপর রানু মন্ডল কেও তার বাবা বের করে দিয়েছিলেন।

এরপর পাড়ার কিছু লোক রানু মন্ডলকে তার মাসির বাড়িতে রেখে আসেন। কিন্তু তার মাসি ও তার দায়িত্ব নিতে চান না। জানা যায় ছোটবেলাতে তিনি নিজে বাড়ির সমস্ত কাজ করতেন।স্কুলেও তার ভর্তি হওয়া হয়নি। তার মাসি রানু মন্ডলকে মুম্বাইতে পাঠিয়ে দিয়েছিলেন ।সেখানে একটি বাড়িতে তিনি কাজ করতেন। তবে তার টাকা পৌঁছে যেত তার মাসির বাড়িতে। কিন্তু ছোট অবস্থায় সে অত কাজ করতে না পারায় তাকে আবারও রানাঘাটে তার মাসির বাড়িতে ফিরে যেতে হয়। এরপরে রানু মন্ডলের মাসির বিয়ে হয়।

এরপর একদিনের রানু মন্ডল তার মেসোর সঙ্গে মেলায় ঘুরতে যান। সেখানে তার মেসো, তাকে একটু ছোট রেডিও কিনে দিয়েছিল। বাসে উঠে সেই ভারী রেডিও হাতে রানু মন্ডল দাঁড়িয়েছিল ।বাসের ঝাঁকুনিতে নিজে পড়ে গিয়েও রেডিওর কোন ক্ষতি হতে দেয়নি সে। রেডিও শুনে নিজের গলায় রানু মন্ডল গান তুলতে পারতেন। তারপর একটু বড় হতেই তিনি মঞ্চে গান গাওয়া শুরু করলেন এবং গান গেয়ে যা উপার্জন করতেন তার মধ্যে থেকে কিছু টাকা তিনি মাসিও মেসোর হাতে তুলে দিতেন।

এরপর একটি অনুষ্ঠানে গান গাইতে গিয়ে তিনি প্রেমে পড়লেন । তার বিয়েও হলো। কিন্তু আবারও তার মায়ের মত মেয়ে জন্ম দেওয়ার অপরাধে তার স্বামী তাকে ছেড়ে চলে গেল। এরপর তিনি কখনো মঞ্চ এ অনুষ্ঠান করে বা লোকের থেকে টাকা চেয়ে তার মেয়েকে বড় করে পড়াশোনা করিয়েছেন। এই মেয়েও একসময় তার প্রেমিককে বিয়ে করে চলে যায়। মেয়েও এরপর রানু মন্ডলের কোন দায়িত্ব নেয়নি। তার হাতে আর কোন টাকা না থাকায় ভিক্ষা করতে শুরু করেন তিনি । তার পরের ঘটনা আমাদের সকলেরই জানা। অতীন্দ্র নামক এক ব্যক্তি তার গানের ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ার ভাইরাল করেন এবং তারপরে রানু মন্ডল হয়ে যায় সকলের পরিচিত। এভাবেই রানু মন্ডল সকলের পরিচিতি পায়।

Back to top button
Close

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker