২৪-এ চিরঘুমের দেশে চলে গেল এক তরতাজা প্রাণ। মৃত্যুর সাথে বারবার লড়াই করেছে যে, সে আর শেষ লড়াইয়ে জিততে পারলো না। বাবা, মা, প্রেমিক, আত্মীয়, বন্ধুদের কাঁদিয়ে বহরমপুরের মেয়ে ‘মিষ্টি’ চলে গেল । ঐন্দ্রিলা শর্মা (Aindrila Sharma), লড়াইয়ের আরেক নাম।
এই মেয়ে মাত্র ২৪ বছর বয়সেই শিখিয়ে দিয়ে গেল অনেক কিছু। লড়াই কাকে বলে, মনোবল কাকে বলে- সবটাই শিখিয়েছে সে। তার সাথে সাথে সে আর তাঁর প্রেমিক সবাইকে বিশ্বাস করতে শিখিয়েছে ভালোবাসায়, পাশে থাকায়। কৃত্রিমতায় ছেয়ে যাওয়া এই সমাজের অকৃত্রিম ভালোবাসায় মোড়া এই জুটি মনে থেকে যাবে অনুরাগীদের।
ঐন্দ্রিলা শর্মা, ছোট থেকেই তাঁর ইচ্ছা ছিল ‘নায়িকা’ হওয়ার। বাবা, দিদি চিকিৎসক হওয়া সত্ত্বেও ঐন্দ্রিলার সবরকম ইচ্ছা পূরণে পাশে ছিল তাঁর পরিবার। অভিনেত্রী হওয়ার স্বপ্ন দেখার সাথে সাথে চালিয়ে গেছেন পড়াশোনাও। কলকাতার একটি বেসরকারি কলেজে কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার জন্য ভর্তি হন।
যদিও পরবর্তীতে অসুস্থতার কারণে সেই পড়াশোনা শেষ করা হয়নি তাঁর। ২০১৫, ৫ ফেব্রুয়ারি, ১৮ বছর বয়স যখন তাঁর তখনই জগতে পারেন তিনি ক্যান্সারে আক্রান্ত। ডাক্তাররা বলেছিলেন ঐন্দ্রিলার হাতে সময় ‘আর মাত্র ছ’মাস’। কিন্তু সেখান থেকে লড়াই করে ২০১৬ সালে সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে ওঠেন তিনি।
এরপরেই অভিনয় জগতে আসেন। জনপ্রিয় হতে শুরু করেন। পরিচয় হয় সব্যসাচী চৌধুরীর সাথে। বন্ধুত্ব প্রেমের সম্পর্কে মোড় নেয়। এরপরে পুনরায় ক্যান্সার, কেমোথেরাপি সবকিছুর সঙ্গে লড়াই করেন তিনি। তাঁর মাঝেও স্বপ্ন দেখতেন ভালো অভিনেত্রী হওয়ার। একইসাথে স্বপ্ন দেখতেন সমাজসেবা করার।
তাঁর মা বলেন, ঐন্দ্রিলা বহরমপুরে অনাথ আশ্রম (Orphan house) করবেন বলেও স্থির করেছিলেন। কিন্তু সে স্বপ্ন আর পূরণ হল না। আজীবন পরিবার, প্রেমিক সবাইকে পাশে পেয়েছেন। তাও মৃত্যুর মধ্য দিয়েই শেষ হল তাঁর জীবনের গল্প। ২৪ বছর বয়সটা কম হলেও, সবই পেয়েছেন তিনি। পরিবারের সমর্থন, প্রেমিকের অকৃত্রিম ভালোবাসা, অনুরাগীদের স্নেহ, ভালোবাসা, আশীর্বাদ সব পেয়েছেন। তবুও অপূর্ণ রইলো তাঁর অনাথ আশ্রম করার স্বপ্ন।